পেকুয়া প্রতিনিধি :: পেকুয়ায় মানববন্ধন কর্মসূচীতে পেকুয়া কবির আহমদ চৌধুরী বাজারের হকার ব্যবসায়ীরা বলেছেন, আগে পুনর্বাসন করতে হবে। এরপর উচ্ছেদ প্রক্রিয়ায় যেতে পারেন। সরকারকে আহবান করছি আমরা হকাররা ছিন্নমূল ব্যবসায়ী ক্ষুদ্র পরিসরে ব্যবসা করে সংসার চালায়। ছেলে সন্তান পরিবারের রিজিক যোগায়। এখানে আমাদের তেমন মূলধন নেই। সরকারকে বলছি পেকুয়া কবির আহমদ চৌধুরী বাজারে আমরা ৩০ বছর ধরে হকার ব্যবসায় আছি। সরকারী জায়গায় আমরা হকার ব্যবসা করি। তবে সরকারকে ট্যাক্স দিয়ে মূলত এ ব্যবসা করে থাকি।
৩ শতাধিক হকার পেকুয়ায় কবির আহমদ চৌধুরী বাজারে দোকান নিয়ে ব্যবসা করে। স্বল্প পুঁজির এ ব্যবসায়ীরা এখন উচ্ছেদ আতংকে ভোগছে। আমরা ভীতির মধ্যে রয়েছি। যে কোন মুহুর্তে উচ্ছেদ হতে পারি। জীবিকা ও জীবিকায়নের তাগিদে আমরা হকার মার্কেটে দোকান খোলে পণ্য বিক্রি করি। ৩শত হকার উচ্ছেদ হয়ে গেলে এর অর্থনৈতিক নেতিবাচক প্রভাব পড়বে এ অঞ্চলের ২ হাজার মানুষের জীবিকায়নে। একমাত্র অর্থনৈতিক অবলম্বন হচ্ছে ভ্রাম্যমান এ ব্যবসা।
১৫ কোটি টাকা ঋণ রয়েছে। এরই মধ্যে মহামারী করোনার কারনে হকার ব্যবসা থেমে গিয়েছিল। হঠাৎ উচ্ছেদ হয়ে গেলে ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীর বিশাল অংশ মারাত্মক দেনাগ্রস্ত হয়ে যাবে। বিভিন্ন ব্যাংকসহ আর্থিক প্রতিষ্টান থেকে লোন নিয়ে আমরা ব্যবসা করছি। এনজিও সংস্থার কাছ থেকেও লোন নিয়ে ব্যবসার মূলধন খাতে যোগান দেয়া হয়েছে। তবে অত্যন্ত পরিতাপের বিষয় হঠাৎ উচ্ছেদ হয়ে গেলে আমরা ৩শতাধিক ব্যবসায়ী দেউলিয়া হয়ে যাবে। বেকারত্ব দূরীভূত করতে সরকারী জায়গায় হকার ব্যবসা করছি। অন্ন মানুষের মৌলিক অধিকার।
এ অন্নকে বাঁচাতে আমরা ঐক্যবদ্ধ হয়েছি। সরকার পেকুয়া বাজারে একটি অত্যাধুনিক বহুতল ভবন নির্মাণকাজ বাস্তবায়ন করবে। ব্যবসায়ীদের স্থায়ী শেড নির্মাণসহ করা হচ্ছে পুনর্বাসন। আমরা চাই এ মার্কেট হকারদের অনুকুলে দোকান বরাদ্দ দেয়া হয়।
প্রকৃত হকারদের তালিকা করে ওই দোকান বরাদ্ধসহ হকারদের পুনর্বাসন করতে হবে। তবে উচ্ছেদের আগে অস্থায়ীভাবে ব্যবসা চালিয়ে যাওয়ার স্থান নির্ধারণ করিয়ে দিতে হবে। সেখান থেকে ব্যবসা চালিয়ে যাব। এরপর মার্কেট নির্মাণ হয়ে গেলে সেখানে আমরা ফের পুনর্বাসন হব। এর প্রতিজ্ঞা চাই আমরা। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনাকে আহবান করছি আপনি পীড়িত মানুষের নেত্রী। আ’লীগের রাজনীতি হচ্ছে দরিদ্র মানুষের অধিকারের পক্ষে। আমরা আপনার দৃষ্টি আকর্ষন করছি। না হয় পথে বসতে হবে। এতগুলো মানুষ কি করবে। এদের প্রতি মানবিক দৃষ্টি দিতে হবে। চকরিয়া-পেকুয়ার সাংসদ জাফর আলম বিএ অনার্সকে বলছি আপনি সরকারের প্রতিনিধি আমাদের যৌক্তিক দাবী হচ্ছে উচ্ছেদের আগে পুনর্বাসন করতে হবে।
২১ নভেম্বর (শনিবার) সকাল ৯ টার দিকে পেকুয়া বাজারের হকারদের বিশাল মানববন্ধন কর্মসূচী পালিত হয়েছে। মগনামা-চকরিয়া সড়কের কবির আহমদ চৌধুরী বাজারের প্রধান মোকামে ওই মানববন্ধন কর্মসুচীতে প্রায় ৩শতাধিক হকার ও বিপুল পরিমাণ ব্যবসায়ীরা উপস্থিত ছিলেন। এ সময় ফেস্টুন,ব্যানার, পোস্টার ও প্লেকার্ড নিয়ে হকাররা বিভিন্ন দাবী দাওয়া নিয়ে উচ্ছেদ থেকে পরিত্রাণ পেতে এ মানববন্ধনে মিলিত হন। পেকুয়া বাজার হকার ব্যবসায়ী সমবায় সমিতির সভাপতি মো: বাদশাহ, সাধারন সম্পাদক মোহাম্মদ শফির নেতৃত্বে ওই মানববন্ধনে বাজারের অন্যান্য ব্যবসায়ীরা উপস্থিত থেকে মানববন্ধন কর্মসূচীর প্রতি সমর্থন ও সংহতি প্রকাশ করেন।
এ সময় সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে হকারদের পক্ষে বিভিন্ন দাবী দাওয়া নিয়ে আলোচনা করেন জাতীয় পার্টি নেতা সাজ্জাদুল ইসলাম, হকার সমিতির সভাপতি মোহাম্মদ বাদশাহ, সাধারন সম্পাদক মোহাম্মদ শফি, পেকুয়া বাজার ঋণদান সমিতির সাধারন সম্পাদক তারেক ছিদ্দিকী প্রমুখ।
পাঠকের মতামত: